তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্র ও সুবিধা সমূহ
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্র ও সুবিধা সমূহ: বর্তমান যুগ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ। মানুষের জীবনযাত্রাকে বহুলাংশে পরিবর্তন করে দিয়েয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। মানুষ এখন পৃথিবীটাকে হাতে মুঠোয় নিয়ে এসেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে। আজ আমরা তোমাদের সাথে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্র ও সুবিধা সমূহ নিয়ে আলোচনা করবো।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্র ও সুবিধা সমূহ
আজকের প্রবন্ধ অনুসরণ করে তুমি ৬ষ্ঠ শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ২য় অ্যাসাইনমেন্ট এর মূল্যায়ন নির্দেশক এর আলোকে উত্তর করতে পারবে;
ভূমিকা: বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে আমরা খুবই সৌভাগ্যবান। কারণ ঠিক এই সময়টাতে সারা পৃথিবীতে তথ্য প্রযুক্তির কারণে একটা অসাধারণ বিপ্লব ঘটতে যাচ্ছে।
প্রযুক্তির উন্নতির কারণে কোন কোন ক্ষেত্রে পরিবর্তন হবে সেটি কেউ বলে শেষ করতে পারবে না। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দিয়ে আমরা কেবল তথ্যের আদান-প্রদান করিনা, আমরা তথ্য গুলো বিশ্লেষণ প্রক্রিয়া ও করে আর সেই কাজ করার জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করতে হয় যা একটি প্রযুক্তি।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্র সমূহ
মানব জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার এখন সর্বত্রই। নিচে ব্যবহারের ক্ষেত্র সমূহ দেওয়া হল-
ব্যক্তিগত বা সামাজিক যোগাযোগ: শুধু মোবাইল ফোন দিয়েই আমরা আজকাল একে অন্যের সাথে অনেক বেশি যোগাযোগ করতে পারি।
তার সাথে এসএমএস ইমেইল চ্যাটিং এমনকি সামাজিক যোগাযোগ যদি বিবেচনা করি তাহলে দেখতে পাব যোগাযোগের বেলায় একটা অনেক পরিবর্তন এসেছে।
বিনোদন: বই পড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখা থেকে শুরু করে কম্পিউটার গেম খেলা পর্যন্ত এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
খেলার মাঠে না গিয়েও ঘরে বসে আমরা অনেক বড় বড় টুর্নামেন্টের খেলা নিখুত ভাবে উপভোগ করতে পারে।
শিক্ষা: লেখাপড়ার ব্যাপারে যখন আইসিটি ব্যবহার করতে শুরু করা হয়েছে তখন হঠাৎ করে সে কাজটি সহজ হতে শুরু করেছে। এখন মাল্টিমিডিয়া তে লেখাপড়ার অসংখ্য চমকপ্রদ বিষয় দেখানো যায়।
বিজ্ঞানের বিষয়গুলো স্ক্রিনে প্রদর্শন করা যায় এমনকি পরীক্ষার খাতায় কিছু না লিখে সরাসরি কম্পিউটারে পরীক্ষা দেওয়া যায়। একটা ই-বুক ডিভাইস শিক্ষার্থীরা শুধু যে তার পাঠ্যবইয়ে রাখতে পারবে তা নয় লাইব্রেরীর কয়েক হাজার বই পর্যন্ত রাখতে পারবে।
চিকিৎসা: বর্তমানে আইসিটি ব্যবহার না করে চিকিৎসার কথা কল্পনাও করা যায় না। এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে নিখুঁতভাবে রোগ নির্ণয় করা যায়।
এমনকি রোগীকে হাসপাতালে যেতে হয় না। বরং তার সব ধরনের তথ্য সংরক্ষণ থেকে শুরু করে তার চিকিৎসার বিভিন্ন খুঁটিনাটি আইসিটির ব্যবহার করে সংরক্ষণ করা সম্ভব। তথ্যপ্রযুক্তির এই প্রক্রিয়া টির নাম টেলিমেডিসিন।
বিজ্ঞান ও গবেষনা: আইসিটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় এই ক্ষেত্রে। আইসিটির কারণে এখন বিজ্ঞানীরা গবেষণায় অনেক জটিল কাজ সহজে করে ফেলতে পারেন।
আমাদের দেশের বিজ্ঞানীরা যখন পাটের জিনোম বের করেছিল তখন তারা আইসিটির ব্যবহার করেছিল।
কৃষি: আইসিটি ব্যবহারের ফলে আমাদের দেশের চাষিরা কৃষিতে সুফল পেতে শুরু করেছে। রেডিও-টেলিভিশনে কৃষি নিয়ে অনুষ্ঠান হচ্ছে, ইন্টারনেটে কৃষির উপর ওয়েবসাইট তৈরি হয়েছে। এমনকি চাষিরা মোবাইল ফোনে কৃষি কল সেন্টারে ফোন করেও কৃষির সমস্যা সমাধান পেয়ে যাচ্ছে।
পরিবেশ ও আবহাওয়া: আইসিটি ব্যবহার করে অনেক আগেই ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়া যায়। আবার রেডিও-টেলিভিশনে উপকূলের মানুষকে সতর্ক করে দেওয়া হয়।
প্রচার ও গণমাধ্যম: পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের যেকোন খবর মুহূর্তের মধ্যেই পেয়ে যাই প্রচার ও গণমাধ্যমের মাধ্যমে।
তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে প্রচার ও গণমাধ্যম প্রক্রিয়ায় অনেক অভূতপূর্ব পরিবর্তন এসেছে। বর্তমান সময়ে টেলিভিশন রেডিও থেকেও অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং লাইভ টিভি চ্যানেল গুলো খুব দ্রুত মানুষের কাছে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের খবর খুব সহজে পৌঁছে দিচ্ছে।
ব্যাংক: যেসব ব্যাংক অনলাইন হয়ে গেছে সে সকল ব্যাংকের হিসাব দাঁড়িয়ে যে কোন শাখায় অর্থ জমা উত্তোলনের সুবিধা পেয়ে থাকে।
একজন গ্রাহক যেকোন জায়গা থেকে এটিএম অটোমেটেড টেলার মেশিন থেকে তার হিসাব থেকে ২৪ ঘন্টা টাকা উত্তোলন করতে পারে। ব্যাংক লেনদেন কে সহজতর করার জন্য বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং এর মত উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে।
শিল্প ও সংস্কৃতি: শিল্প ও সংস্কৃতি তেও আজকাল আইসিটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এক সময়ে ১ সেকেন্ডে কার্টুন ছবি তৈরি করার জন্য ২৬টি ছবি তৈরি করতে হতো।
আইসিটি ব্যবহার করে সেই পরিশ্রম অনেকাংশে কমে গেছে। বর্তমানে এমনভাবে অ্যানিমেশন ছবি তৈরি করা হয় যেন এগুলো দেখতে সত্যি মনে হয়।
ডিজিটাল বাংলাদেশ ও প্রযুক্তিভিত্তিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেবা
প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা সমূহ
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে দৈনন্দিন জীবনে সহজ থেকে সহজতর ও হয়েছে। ঘরে বসেই এখন সবাই সারাবিশ্বের খবরা-খবর জানতে পারছে।
প্রযুক্তি ব্যবহার উপকৃত হচ্ছে সকল স্তরের মানুষ। প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষের কাজকে আরও সহজবোধ্য করে দিয়েছে। যেকোনো সেবা এখন ঘরে বসেই পাওয়া সম্ভবপর হচ্ছে প্রযুক্তির ব্যবহারে। ব্যবসা-বাণিজ্যে আইসিটির ব্যবহার অনেকাংশে বেড়েছে এতে বিক্রেতা এবং ক্রেতা দুজনেই উপকৃত হচ্ছেন।
আইসিটি ব্যবহার করে অফিসের কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সাধারণত সেটা কি গভর্নেন্স বলে। দেশের প্রতিরক্ষা কাজে সেনাবাহিনী আইসিটি ব্যবহার করে।
উপসংহার:
তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা যে শুধুমাত্র আমাদের নিজের জীবনটাকে সহজ করতে পারি তা নয়, আমরা কিন্তু আমাদের দেশটাকে ও পাল্টে ফেলতে পারি।
সকল বিষয়ের আপডেট তথ্য পেতে আমাদের Facebook page ও Facebook group এ যোগ দিন।
গান হচ্ছে পৃথিবীর সম্পদ, আর যে দেশের মানুষ লেখাপড়া শিখে শিক্ষিত, যারা জ্ঞান চর্চা করে সেই দেশ হচ্ছে সম্পদশালী দেশ। তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি শেখার দরজার সবার জন্য খোলা। তাই আমরা যত তাড়াতাড়ি এই প্রযুক্তি শিক্ষা নিতে পারবো, ততো তাড়াতাড়ি আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে পারব এবং দেশকে সম্পদশালী করে গড়ে তুলতে পারব।
আশা করছি তোমরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্র ও সুবিধা সমূহ বিষয়ে ভালভাবে ধারণা লাভ করতে পেরেছো; এই আলোকে ৬ষ্ঠ শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ২য় অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর সুন্দরভাবে লিখতে পারবে।