তোমাদের সামাজিক জীবনে প্রচলিত চারটি লোকসংস্কৃতির উপাদান চিহ্নিত করো এবং এই উপাদানগুলো তোমার জীবনে কি ধরনের প্রভাব ফেলে তা বর্ণনা করো
তোমাদের সামাজিক জীবনে প্রচলিত চারটি লোকসংস্কৃতির উপাদান চিহ্নিত করো এবং এই উপাদানগুলো তোমার জীবনে কি ধরনের প্রভাব ফেলে তা বর্ণনা করো
এই নির্ধারিত কাজটি করার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে-
- লোকসংস্কৃতির সুস্পষ্ট ধারণা প্রদান।
- প্রচলিত লোকসংস্কৃতির সঠিক উদাহরণ প্রদান।
- শিক্ষার্থীর নিজ জীবনের উপর প্রতিফলনের ব্যাখ্যা প্রদান।
৭ম শ্রেণি ১০ম সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়
দশম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট এ দেশের সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে অধ্যায়নরত সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পাঠ্যবই থেকে একটি নির্ধারিত কাজ দেয়া হয়েছে। এর আগে দ্বিতীয় সপ্তাহে সপ্তম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পাঠ্যবই থেকে প্রথম এসাইনমেন্ট ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিক ঘটনাবলি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন দেওয়া হয়েছিল।
আমাদের সামাজিক জীবনে প্রচলিত চারটি লোকসংস্কৃতির উপাদান চিহ্নিত করা হলো এবং এই উপাদানগুলো আমার জীবনে যে ধরনের প্রভাব ফেলে তা বর্ণনা করা হলো-
যুগ যুগ ধরে সাধারণ মানুষ যে সংস্কৃতি লালন করে আসছে সাধারণ অর্থে তাই লোকসংস্কৃতি।
লোকসংস্কৃতি বলতে আমরা বুঝি সাধারণ মানুষ ও তার সমাজের সংস্কৃতি। অর্থাৎ লোক সমাজের সংস্কৃতি।
হাজার বছর ধরে এই সংস্কৃতি এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
বাংলাদেশে আদিকাল থেকেই মানুষ লোকসংস্কৃতি লালন করছে। মানুষের মুখে মুখে চলা লোকসংস্কৃতির অনেক কিছুই সময়ের সাথে সাথে একটু একটু করে পরিবর্তন হয়েছে।
লোকসংস্কৃতির যাত্রা শুরু হয়েছে গ্রামীণ কৃষিজীবী সমাজের মধ্য থেকে।
যেসব বিষয়ে লোকসংস্কৃতির পরিচয় রয়েছে তাকে লোকসংস্কৃতির উপাদান বলা হয়।
যেমন- তাঁত শিল্প, কাঁসা-শিল্প, মৃৎশিল্প, নকশি কাঁথা শিল্প, লোক কাহিনী বা কিচ্ছা, লোকগীতি, লোকচিকিৎসা, লোকসংগীত, প্রবাদ-প্রবচন, খনার বচন, ডাকের কথা, ছেলেভুলানো ছড়া, ধাঁধা, লোকনাটক ইত্যাদি।
লোকসংস্কৃতির মৌলিক উপাদান হিসেবে ধরা হয়-
১.লোকশিল্প,
২.লোকবিজ্ঞান,
৩.লোকযান,
৪.লোকক্রীড়া উল্লেখযোগ্য।
কতক রীতি বা আচার এর উপর ভিত্তি করে লোকসংস্কৃতি গড়ে ওঠে।
যেমন- গায়ে হলুদ আমাদের সমাজের বিবাহ রীতির একটি উল্লেখযোগ্য দিক। গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের আচার-আচরণ ও সংস্কার পালন করা হয়।
হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে পীর-ফকির, সাধু-সন্ন্যাসী বা মৌলভী-পুরোহিতদের কাছ থেকে তাবিজ-কবজ, পানি পড়া ইত্যাদি রোগমুক্তির জন্য ব্যবহার করে।
লোকসমাজে বিশ্বাস রয়েছে বাচ্চার উপর অশুভ দৃষ্টি পড়লে ক্ষতি হতে পারে। সাধারণভাবে একে চোখ লাগা বলে। অশুভদৃষ্টি কাটানোর জন্য তাই বাচ্চার কপালের পাশে কাজলের টিপ দেওয়া হয়।
সামাজিক জীবনে প্রচলিত চারটি লোকসংস্কৃতির উপাদান চিহ্নিত করা
অনেকদিন খরা হলে অর্থাৎ বৃষ্টি না নামলে কৃষক খুব চিন্তায় পড়ে যায়। চাষাবাদের খুব ক্ষতি হয়ে যাবে।
বৃষ্টি নামানোর জন্য গ্রামের মেয়েরা একটি অনুষ্ঠান করে।
তারা কুলা নিয়ে বাড়ি বাড়ি যায়। মুখে বৃষ্টির গান গায় বা ছড়া কাটে।
বাড়ির মেয়েরা কুলার উপর পানি ঢেলে দেয়। তারা বিশ্বাস করে এভাবে আকাশ থেকে বৃষ্টি নামবে।
আধুনিক সেচ ব্যবস্থার কারণে এ রীতির প্রচলন বর্তমানে নেই বললেই চলে।
বাস্তব জীবনে গ্রামীণ সমাজে উপরে উল্লেখিত লোকসংস্কৃতির প্রতিফলন দেখা যায়।